দেবী মনসার জাতগান

কবিয়াল গণেশ ভট্টাচার্য
কবিগানের মত মনসার জাতগানও বাংলার এক ঐতিহ্যপূর্ণ লোকগান৷ সাধারণতঃ আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এই গান বঙ্গের মনসা মন্দিরগুলিতে মাতৃৃৃৃৃৃৃৃৃসদনে গাওয়া হয়৷ জ্যৈষ্ঠ মাসে দশহরা থেকে শুরু করে আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি অর্থাৎ ডাকসংক্রান্তি পর্যন্ত শনি ও মঙ্গলবার ধরে বিভিন্ন স্থানে নাগমাতার পূজা অনুষ্ঠিত হয়৷ গ্রামগঞ্জে তাই আজও দেবীর লীলাসম্বলিত জাতগান খুব জনপ্রিয়৷

জাতগানের ভিডিও
কবিগানের সাথে এই জাতগানের কিয়দংশে সাদৃৃৃৃৃৃশ্য লক্ষ্য করা যায়৷ অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতকে কয়েকটি বিশেষ পর্যায় গেয়ে কবিগান শুরু করা হত৷ তৎকালীন কবিয়ালগণ প্রথমেই সখীসংবাদ পর্যায় গাইতেন৷ সখীসংবাদ ও দূতীসংবাদ কীর্তনের মাথুরলীলা সম্পর্কিত, যা মথুরাকেন্দ্রিক৷ মনসার জাতগানেও এই সখীসংবাদ ও দূতীসংবাদ পর্যায় খুব শ্রুতিমধুর, কারণ এই গান মূলতঃ বিরহরসকেন্দ্রিক৷ এই পর্যায় ব্যতীত সর্পাঘাতে পতি লখিন্দরের প্রাণনাশের পর তাকে নিয়ে কলার মান্দারে গাঙ্গুড়ের জলে ভেসে যাওয়া, কণ্টকাকীর্ণ পথে শত বিপত্তি উপেক্ষা করে স্বর্গে গিয়ে স্বামীকে বাঁচানো, ভাসানের এই করুণ গানগুলিতে চোখে জল আসে৷
কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজকাল সমাজ থেকে এইসব মাটির গান হারিয়ে যেতে বসেছে৷ কিছু স্বার্থান্বেষী সংস্কৃৃৃৃৃৃৃৃতির ধ্বজাধারী ভণ্ড ব্যক্তিদের ঔদাসীন্যতায় ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের দাপটে অদূর ভবিষ্যতে এইসব গানের অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখা দুস্কর৷